Sunday, June 1, 2014

ভাল ক্যারিয়ার গড়তে দশটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস

ছেলেবেলা থেকেই সবাই স্বপ্ন দেখে ভাল কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করার। স্বপ্নেরচাকরি পেতে সবাই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনাও করে। স্বপ্নের চাকরিটা পেতেচেষ্টা চালিয়ে যায় সবাই। তবে ক’জন স্বপ্নকে সত্যি করতে পারে—এই প্রশ্নটাকিন্তু রয়েই গেছে। তবে স্বপ্নের চাকরি পেতে মানুষ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনাকরে ঠিকই, তবে স্বপ্নকে ধরতে পারেনা তাদের কিছু ব্যক্তিগত ও ভাবনাগত অভাবেরফলে। অভাবগুলো এতোটাই তীব্র হয় যে, পুরোদমে বিকল করে দেয় ২০-২৫ বছর ধরেপুষে রাখা স্বপ্নের চাকরির আকাঙ্ক্ষা। অনাকাঙ্ক্ষিত এইসব অভাবগুলোকে
জয়করেই আমাদেরকে স্বপ্নের লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। ভাল ক্যারিয়ার গড়তে অনেকবিষয়ই বিবেচ্য। এই লেখায় দশটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস নিয়ে আলোচনা করা হলো।


১. ইতিবাচক মনোভাব
আমরা সবাই জানি নেতিবাচকের চেয়ে ইতিবাচক কর্মকান্ড ও মনোভাব সবার কাছেইগ্রহণযোগ্য। সফলভাবে ক্যারিয়ার গড়তেও ইতিবাচক মনোভাবের বিকল্প নেই।সত্যিকার অর্থে প্রত্যেকটি কাজেই ইতিবাচক মনোভাবের প্রাধান্য বেশি। আমিঅথবা আপনি এটা ভাল করেই জানি ‘উপদেশ দেয়া সহজ তবে পালন করাটাই কঠিন’। সেইসাথে আমরা এটাও জানি ইতিবাচক অবস্থান একজন মানুষকে কোলাহল, উত্তেজনাউগ্রতা, দুঃশ্চিন্তা থেকে দূরে রাখে। আপনি যখন মনের দিক থেকে সত্ থাকবেন, তখন আপনাআপনি মন প্রফুল্ল থাকবে। নিজের সাথে বোঝাপড়াটাও ভাল হবে। মনকেপ্রফুল্ল রাখতে পারলে স্বপ্নের চাকরিটাই না শুধু যেকোন কাজেই সফলতা পেতেপারি আমরা।
২. নিজেকে জানুন
হরহামেশাই দেখা যায় ভাল বেতনের চাকরিকে সবাই প্রাধান্য দেয়। আবার বেশিবেতনের চাকরি করলে সমাজেও কদরটা একটু বেশি। তাই সকলেই ঝুঁকে পড়ে বেশিবেতনের চাকরির দিকে। তবে ব্যাপারটা এমন না হয়ে যদি নিজের আকাঙ্ক্ষা ওইচ্ছাকে প্রাধান্য দেয়া হত, তাহলে ব্যাপারটা ঈর্ষণীয় হত। তাই আগে জানতেহবে, কোন পেশার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন। আসল কথা হচ্ছে অন্যেরপেশাকে দেখে লাভ নেই। নিজেকে নিজে জিজ্ঞাসার মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে কোনপেশাকে বেছে নেওয়া যায়। মনের তৃপ্তিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর সেজন্যদরকার নিজেকে জানা। নিজের উপর যতটা নির্ভরশীল হওয়া যাবে, সাফল্যের পথে সেসবচেয়ে এগিয়ে।
৩. চাহিদা ও দক্ষতা নির্ধারণ
প্রত্যেকেরই উচিত অবসর সময়টাতে নিজেতে তৈরি করা। এইচএসসি পাস একজন নিশ্চয়ইব্যাংকের চিফ এক্সিকিউটিভ হিসেবে চাকরি পাবে না। তাই নিজের দক্ষতার উপরনির্ভর করেই চাহিদার চাকরিগুলোকে বেছে নিতে হবে। তারপর সর্বোচ্চ কাঙ্ক্ষিতচাকরিটা পেতে প্রয়োজনীয় কাজগুলো করতে হবে। আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে কোনবিষয়টি আপনাকে বেশি টানে। ধরুন, আপনি কম্পিউটারে কাজ করতেই বেশি পছন্দকরেন। কম্পিউটারের সামনে বসলে আর উঠতেই ইচ্ছে করে না। আর কম্পিউটারও ভালজানা আপনার। কম্পিউটার দক্ষতা ও আগ্রহ এই দুই মিলালে বলাই যায়—আপনার উচিততথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়া। সে চেষ্টাটাই করতে হবে আপনাকে।
৪. ব্যক্তিত্ব নিরূপণ
কর্মক্ষেত্রে সফল হতে হলে ব্যক্তিত্ব বা পার্সোনালিটি নিরূপণ করার দায়িত্বওআপনারই। পার্সোনালিটি নিরূপণ করার জন্য আপনি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন তৈরি করেনিতে পারেন। অথবা কারও তৈরি করা প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে নিজেকে যাচাই করেনিতে পারেন। মায়ারস ব্রিগস টাইপ ইন্ডিকেটর (এমবিটিআই) নামের পরীক্ষা দিয়েবুদ্ধিমত্তা ও ব্যক্তিগত দৃঢ়তা নিরূপণ করতে পারেন।
৫. নমনীয়তা
উগ্রতা সর্বদাই খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। কোন কাজই জোরপূর্বক করে নেয়াযায় না। আর জোরপূর্বক করে নেয়া হলেও পরিবর্তিতে তার কুফল ভোগ করতেই হয়। তাইউগ্রতা নয়, নমনীয়তায় জীবন গড়াটাই যৌক্তিক।
৬. পরামর্শ গ্রহণ
অনেক সময়ই আমরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগী। এটা নয় ওটা ভাল। আসলে যে কোনটা ভালতাই খুঁজে বের করতে পারি না আমরা। তাই আমাদের উচিত পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় কিংবা কোন বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে সঠিক ও উপযুক্ত চাকরিটা বেছেনেওয়া। বিশেষ করে বিশেষজ্ঞরা চাকরির বাজার সম্পর্কে প্রচুর জানেন। শিক্ষাগতযোগ্যতা, প্রতিযোগিতামূলক কর্মক্ষেত্র, ক্রমোন্নতি ও বেতন সবদিক সম্পর্কেইএকজন বিশেষজ্ঞ আপনাকে সঠিক চাকরিটি বেছে নিতে সহায়তা করতে পারবেন।
৭. সময় সচেতনতা
প্রত্যেকটা মানুষেরই উচিত সময়ের সঠিক ব্যবহার করা। সময়ের কাজ সময়ে করতেপারলে যেকোন ব্যক্তিই তার ক্যারিয়ারকে সফল স্থানে নিয়ে যেতে পারবে। অযথাসময় ক্ষেপনকারীর একজন ব্যক্তি প্রয়োজনীয় সময় এসে হাঁপিয়ে উঠে। ফলে সে তারকাজে ভুল করে। পরে করবো বলে ফেলে রাখলে কোন কাজেরই সফল সমাধান দেয়া সম্ভবনয়। তাই সময় সচেতন হয়ে উঠুন।
৮. নেটওয়ার্ক তৈরি
সফল ক্যারিয়ার গড়তে আপনাকে অবশ্যই একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। তবেনেটওয়ার্কটি অবশ্যই সত্ ও উদ্দেশ্যবহুল হওয়া চাই। নানাজনের সাথে কথা বলে ওবন্ধুত্ব করাটাও সফল ক্যারিয়ার গড়তে সহায়তা করতে পারবে।
৯. ক্যারিয়ার জিজ্ঞাসা
আপনি যদি আপনার কর্মক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করেন তবে কিন্তু সমস্যারসম্মুখীন হবেন। আপনার তখন সম্ভব হবে না স্কুলে ফিরে গিয়ে নতুনভাবে পড়াশোনাকরে অন্যক্ষেত্রে সফল হবার। তাই আপনার উচিত সঠিক কোন ক্যারিয়ার কলেজ বাট্রেনিং সেন্টার খুঁজে বের করা। কারণ ক্যারিয়ার কলেজ বা ট্রেনিং সেন্টারেগিয়ে আপনি আপনার ক্যারিয়ারের নানা সমস্যার উত্তর খুঁজে পাবেন। আপনি নিজেওক্যারিয়ার জিজ্ঞাসার মাধ্যমে আপনার নানা সমস্যার সমাধান করে নিতে পারেন।নতুন নতুন সব আইডিয়া তৈরি করে তার উপর পরীক্ষা নীরিক্ষার মাধ্যমেওক্যারিয়ারে সফলতা পাওয়া সম্ভব।
১০. সহিষ্ণুতা
প্রবাদ আছে, ‘ভাল জিনিস একটু দেরিতেই আসে’। কোন কাজেই তাড়াহুড়া করাটা ভাল না। তড়িত্ যেকোনো কাজের মধ্যে ভুল হবার সম্ভাবনা বেশি।

No comments:

Post a Comment

পোস্ট সম্পর্কে মতামত দিন