এই বছর হয়ে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষার
প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরুদ্ধে একাত্ম হয়ে শহীদ মিনারের বেদীতে আজকে সকাল আটটা
থেকে বারোটা পর্যন্ত একতাবদ্ধ হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সাথে
যোগ দিয়েছিল সবেমাত্র এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে আসা কয়েকজন শিক্ষার্থী,
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ এবং সচেতন নাগরিক সমাজ। শাহজালাল বিজ্ঞান এবং
প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. জাফর ইকবালের নেতৃত্বে বুয়েট, ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশের শিক্ষা
ব্যবস্থার এমন দুর্যোগের দিনে সরকার এবং জনগণকে সচেতন করতে শহীদ মিনারে
একত্রিত হয়েছিলেন।
সকাল আটটা থেকেই ড. ইকবাল শহীদ মিনারে অবস্থান নেন। প্রথম দিকে লোক সমাগম না থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বৃষ্টি হলেও তারা তাঁদের অবস্থান পরিবর্তন করেননি। প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তারা সরকারকে জোরালো এবং কঠিন পদক্ষেপ নেবার আহ্বান জানান।
সকাল আটটা থেকেই ড. ইকবাল শহীদ মিনারে অবস্থান নেন। প্রথম দিকে লোক সমাগম না থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বৃষ্টি হলেও তারা তাঁদের অবস্থান পরিবর্তন করেননি। প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তারা সরকারকে জোরালো এবং কঠিন পদক্ষেপ নেবার আহ্বান জানান।
গত ২৪ তারিখে ফেসবুকের একটি ইভেন্ট
“প্রশ্নপত্র ফাঁস মানি না, মানব না” থেকে এই আন্দোলনের যাত্রা শুরু। সেদিনই
কতিপয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ঘটনার বিরুদ্ধে শহীদ মিনারে অবস্থান নেয়।
২৫ এবং ২৭ তারিখেও তারা শহীদ মিনারে অবস্থান নেয়। আজকে ড. জাফর ইকবাল, ড.
আনোয়ার হোসেন, কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, আহসান হাবীব এবং বিভিন্ন
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রমুখ শিক্ষকদের সংহতি জানানোর মাধ্যমে আন্দোলন বেগ পায়।
ড. ইকবাল বলেন যে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনাটি বাংলাদেশের জন্য এখন সবচেয়ে
বিপজ্জনক ঘটনা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো
হয় যে এই বছর বাংলা ১ম পত্র বাদ দিয়ে বাকি সব বিষয়ের প্রশ্ন আগেই ফাঁস হয়ে
গিয়েছিল। কর্তৃপক্ষ শুধু ইংরেজি ২য় পত্র পরীক্ষা এই কারণে স্থগিত করেছে।
গণিত ২য় পত্রের প্রশ্ন আগের দিন পাওয়া গেলেও মূল পরীক্ষার প্রশ্নের সাথে
ফাঁস হওয়া প্রশ্নের কোন সামঞ্জস্য মেলেনি। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন যে
কর্তৃপক্ষের কাছে প্রমাণসহ বারবার পরীক্ষা স্থগিতের আবেদন করলেও তারা আমলে
নেয়নি বরং আগের দিন ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই পরীক্ষা হয়েছে। তারা দাবী করেন যে,
একটি পরীক্ষায় ৭৫ নাম্বারের ৭২ নাম্বারই আগের দিন ফাঁস হয়ে গিয়েছিল এবং মূল
পরীক্ষায় তা হুবহু আসে।
শিক্ষার্থীরা আগামী এক সপ্তাহ দেশের
বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরুদ্ধে জনসংযোগ চালাবে।
আগামী শুক্রবার সকাল ৯ টায় তারা আবারও জমায়েতের ডাক দিয়েছে। তাদের
দাবীগুলোর মধ্যে আছে -
ক) শিক্ষামন্ত্রীকে অবিলম্বে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা স্বীকার করে এর দায়দায়িত্ব নিতে হবে।
খ) প্রশ্ন ফাঁসের সাথে সংশ্লিষ্ট দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করতে হবে।
গ) ভবিষ্যতের যে কোন পাবলিক পরীক্ষাতে যাতে প্রশ্ন ফাঁস না হয় সে জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
খ) প্রশ্ন ফাঁসের সাথে সংশ্লিষ্ট দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করতে হবে।
গ) ভবিষ্যতের যে কোন পাবলিক পরীক্ষাতে যাতে প্রশ্ন ফাঁস না হয় সে জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
আন্দোলনে এই বছর পরীক্ষা দেওয়া কতিপয়
শিক্ষার্থীও অংশ নেয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারে তাদের মন্তব্য চাওয়া হলে
তারা বলে যে প্রশ্ন জেনে পরীক্ষা দেওয়ার মাঝে কোন কৃতিত্ব নেই আর তারা
নিজেদের মেধা দিয়েই পরীক্ষায় সফল হতে চায়। যদিও যারা প্রশ্নপত্র জেনে
পরীক্ষা দিয়েছে তাদের সম্বন্ধে তারা কোন মন্তব্য করেননি। উল্লেখ্য যে
এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফেসবুকের বিভিন্ন পেজের মাধ্যমে সবার কাছে ছড়িয়ে
দেওয়া হয়েছে।
No comments:
Post a Comment
পোস্ট সম্পর্কে মতামত দিন