সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা'য়ালার জন্য যিনি রব্বুল আলামীন। দুরুদ ও সালাম
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি, তাঁর পরিবারবর্গ
(রা), সাহাবায়ে কিরাম (রা) ও সালেহীন (র)-গণের প্রতি। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি
যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই। আমরা আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ
(সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর বান্দাহ এবং তাঁর রসূল।
আল্লাহ তা'য়ালার নৈকট্য, সন্তোষ ও মহব্বত অর্জনের লক্ষ্যে যারা সাধনা করতে চান তাদেরকে আত্ম-পরিচয় সম্পর্কে ধারণা এবং আল্লাহর সাথে তাদের বুনিয়াদি সম্পর্ক অনুধাবন করতে হবে। নিজেকে চিনতে পারলে আল্লাহকে চিনতে পারা যায়। মানব সত্তার পাঁচটি অংশ রয়েছে, যথা- রূহ, কলব, নাফস, জাসাদ ও লিবাস। পাঁচটি অংশই পরস্পর নির্ভরশীল ও প্রভাবাধীন। সুতরাং পরিশুদ্ধির জন্য সব অংশই একত্রে পরিশুদ্ধ করার জন্য অবিরাম সাধনা করতে হবে।
রূহ : রূহ বা মানবাত্মা হল আল্লাহর আদেশে সৃষ্ট সত্তা এবং ব্যক্তির মূল পরিচয়। সৃষ্টির পর থেকে আর মৃত্যু নেই। পাঁচটি জগতে এর পরিভ্রমণ সম্পর্কে জানা যায়। আলমে আরওয়া - আলমে দুনিয়া - আলমে বারযাখ - ইয়াওমুল হাশর -জান্নাত/জাহান্নাম। পরবর্তী অবস্থা শুধুমাত্র আল্লাহ তা'য়ালাই জানেন।
কলব : কলব বা অন্তঃকরণ হল- দেহের মুল অংশ, যার মাধ্যমে রূহ দেহের সাথে সংযুক্ত হয়। কলব হল কম্পিউটারের হার্ডডিস্কের ন্যায়, যা নুরানী পর্দার মাধ্যমে রূহের সাথে এবং জৈবিক পর্দায় দেহের সাথে সংযুক্ত থাকে। কলবের প্রশান্তি, অশান্তি ও রোগ সমস্ত শরীর ও মনকে প্রভাবিত করে। কলবের তিনটি অবস্থা রয়েছে, যথা- মোহরাংকৃত কলব, রোগগ্রস্থ কলব ও প্রশান্ত কলব।
নাফস : নাফস বা জীবাত্মা হল- জাসাদ বা মানব শরীরের সেই শক্তি ও নিয়ন্ত্রন কেন্দ্র যা রূহ (কালবের মাধ্যমে) দেহের সাথে সংযোগের ফলে সৃষ্টি হয়, যা মানুষের সমস্ত শারীরিক ও মানসিক তৎপরতা, চিন্তা ও কল্পনা পরিচালনা করে। নাফসেরও মূলতঃ তিনটি অবস্থা রয়ছে- আম্মারাহ, লাউয়ামাহ ও মুতমাইন্নাহ।
জাসাদ : জাসাদ বা দেহ হল রূহের বাহক ও পোষাক। রূহ যখন যে জগতে অবস্থান করে জাসাদ সে জগতের উপকরণে গঠিত এবং সেখানে বসবাসের উপযোগী বাহন। যেহেতু জাসাদ জগতের উপকরণে গঠিত, তাই এর খাদ্য-পুষ্টি, আরাম-আয়েশ, সুখ-দুঃখ জগতের উপকরণ থেকেই অর্জিত হয়।
লিবাস : লিবাস হল জাসাদের পোষাক। পোষাক শুধুমাত্র দেহের আবরণ নয় বরং এর সৌন্দর্য্য, রুচিশীলতা, চাকচিক্য, শালীনতা, পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতা মানুষের জাসাদ, কলব ও নাফসসহ রূহকেও প্রভাবিত করে থাকে।
পারস্পরিক সম্পর্ক : রূহ বা মানবাত্মা হল শরীরের বাদশাহ, যার উপস্থিতি বা রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে জড়দেহে প্রাণের স্পন্দন হয়। কলব বা অন্তঃকরণ হল মন্ত্রণালয়। যেখানে আল্লাহ, সংগীয় ফিরিশতা, সৎ মাতা-পিতা, সৎ অভিভাবক, সৎ স্বামী/স্ত্রী, সৎ আত্মীয়-স্বজন, সৎ বন্ধুমহল, সৎ পরিবেশ থেকে সর্বদা ভাল মন্ত্রণা দেয়। আবার শয়তান, রিপুসমূহ, জৈবিক দেহ, অসৎ মাতা-পিতা, অসৎ অভিভাবক, অসৎ স্বামী/স্ত্রী, অসৎ আত্মীয়-স্বজন,অসৎ বন্ধুমহল, অসৎ পরিবেশ থেকে সর্বদা খারাপ মন্ত্রণা দেয়া হয়। নাফস বা জীবাত্মা হল প্রবৃত্তি, প্রশাসন ও সামরিক বাহিনী। কোডকৃত ইলহাম হল বিবেক ও আদালত, যার মাধ্যমে সঠিক না ভুল- এর রায় পাওয়া যায়। জাসাদ বা শরীর ও তার অংগ-প্রত্যংগ হল প্রজা- যাদের মাধ্যমে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হয়। লিবাস হল- সৌন্দর্য্য।
জীবন ও মৃত্যুর রহস্য : রূহ যখন জাসাদের সংগে সংযোগ স্থাপন করে তখন দেহ জীবন লাভ করে। কিন্তু সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয় দুইভাবে। ঘুমের মাধ্যমে শুধু রূহ সাময়িকভাবে জাসাদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, কিন্তু রূহের দূর-প্রভাব শরীরের উপর কার্যকরী থাকে। আর মৃত্যুর মাধ্যমে নাফসসহ রূহ স্থায়ীভাবে জাসাদ বা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, ফলে রূহের প্রভাব শরীরের উপর তেমন অবশিষ্ট থাকে না। জাসাদ বা শরীর তখন একটি নির্জীব জড় পদার্থে পরিণত হয়।
আল্লাহ তা'য়ালা জীবন দানের ক্ষেত্রে শরীরের মধ্যে রূহের প্রবেশ এবং মৃত্যুর ক্ষেত্রে প্রাণ (নাফসসহ রূহ) বের হওয়ার কথা বলেছেন। রূহ যখন কলবের মাধ্যমে দেহের সাথে সংযুক্ত হয় তখন জংশনে দেহের পরিচালক নাফ্স তৈরী হয়, ফলে দেহের মধ্যে প্রাণের স্পন্দন সৃষ্টি হয়। যেমন- আল্লাহ বলেন :
অর্থাৎ- (স্মরণ করুন!) যখন আপনার প্রতিপালক ফেরেশতাদেরকে বলেছিলেন : আমি কাদা মাটি থেকে মানুষ সৃষ্টি করছি। যখন আমি তাকে সুষম করব এবং তাতে আমার রূহ সঞ্চারিত করব তখন তোমরা তার প্রতি সিজদবানত হও। (সূরা সোয়াদ : ৭২-৭৩)
দেহ থেকে রূহ এর স্থায়ী বিচ্ছিন্নতাই হল মৃত্যু। রূহ তখন নাফস্সহ জাসাদ বা শরীর থেকে স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন হয়। এই বিচ্ছিন্ন নাফস্সহ রূহকে আত্মা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেমন, আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ
অর্থাৎ- নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের আত্মাসমূহ কবয করেন তাদের মৃত্যুর সময় এবং যাদের মৃত্যুর সময় হয়নি, তাদের আত্মাসমূহও কবয করেন ঘুমের সময়। এরপর তিনি যার মৃত্যুর সিদ্ধান্ত নেন তার আত্মা রেখে দেন এবং অন্যদের আত্মা একটি নির্ধারিত সময়ের জন্য ফিরিয়ে দেন। এরমধ্যে অবশ্যই চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শন আছে। (সূরা যুমার : ৪২)
আল্লাহ তা'য়ালা বিশ্বের সমগ্র মানব জাতিকে এ মহাসত্য উপলব্ধির মাধ্যমে ইহ-জাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণ লাভ করার তৌফিক দান করুন! আ-মী-ন....
আল্লাহ তা'য়ালার নৈকট্য, সন্তোষ ও মহব্বত অর্জনের লক্ষ্যে যারা সাধনা করতে চান তাদেরকে আত্ম-পরিচয় সম্পর্কে ধারণা এবং আল্লাহর সাথে তাদের বুনিয়াদি সম্পর্ক অনুধাবন করতে হবে। নিজেকে চিনতে পারলে আল্লাহকে চিনতে পারা যায়। মানব সত্তার পাঁচটি অংশ রয়েছে, যথা- রূহ, কলব, নাফস, জাসাদ ও লিবাস। পাঁচটি অংশই পরস্পর নির্ভরশীল ও প্রভাবাধীন। সুতরাং পরিশুদ্ধির জন্য সব অংশই একত্রে পরিশুদ্ধ করার জন্য অবিরাম সাধনা করতে হবে।
রূহ : রূহ বা মানবাত্মা হল আল্লাহর আদেশে সৃষ্ট সত্তা এবং ব্যক্তির মূল পরিচয়। সৃষ্টির পর থেকে আর মৃত্যু নেই। পাঁচটি জগতে এর পরিভ্রমণ সম্পর্কে জানা যায়। আলমে আরওয়া - আলমে দুনিয়া - আলমে বারযাখ - ইয়াওমুল হাশর -জান্নাত/জাহান্নাম। পরবর্তী অবস্থা শুধুমাত্র আল্লাহ তা'য়ালাই জানেন।
কলব : কলব বা অন্তঃকরণ হল- দেহের মুল অংশ, যার মাধ্যমে রূহ দেহের সাথে সংযুক্ত হয়। কলব হল কম্পিউটারের হার্ডডিস্কের ন্যায়, যা নুরানী পর্দার মাধ্যমে রূহের সাথে এবং জৈবিক পর্দায় দেহের সাথে সংযুক্ত থাকে। কলবের প্রশান্তি, অশান্তি ও রোগ সমস্ত শরীর ও মনকে প্রভাবিত করে। কলবের তিনটি অবস্থা রয়েছে, যথা- মোহরাংকৃত কলব, রোগগ্রস্থ কলব ও প্রশান্ত কলব।
নাফস : নাফস বা জীবাত্মা হল- জাসাদ বা মানব শরীরের সেই শক্তি ও নিয়ন্ত্রন কেন্দ্র যা রূহ (কালবের মাধ্যমে) দেহের সাথে সংযোগের ফলে সৃষ্টি হয়, যা মানুষের সমস্ত শারীরিক ও মানসিক তৎপরতা, চিন্তা ও কল্পনা পরিচালনা করে। নাফসেরও মূলতঃ তিনটি অবস্থা রয়ছে- আম্মারাহ, লাউয়ামাহ ও মুতমাইন্নাহ।
জাসাদ : জাসাদ বা দেহ হল রূহের বাহক ও পোষাক। রূহ যখন যে জগতে অবস্থান করে জাসাদ সে জগতের উপকরণে গঠিত এবং সেখানে বসবাসের উপযোগী বাহন। যেহেতু জাসাদ জগতের উপকরণে গঠিত, তাই এর খাদ্য-পুষ্টি, আরাম-আয়েশ, সুখ-দুঃখ জগতের উপকরণ থেকেই অর্জিত হয়।
লিবাস : লিবাস হল জাসাদের পোষাক। পোষাক শুধুমাত্র দেহের আবরণ নয় বরং এর সৌন্দর্য্য, রুচিশীলতা, চাকচিক্য, শালীনতা, পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতা মানুষের জাসাদ, কলব ও নাফসসহ রূহকেও প্রভাবিত করে থাকে।
পারস্পরিক সম্পর্ক : রূহ বা মানবাত্মা হল শরীরের বাদশাহ, যার উপস্থিতি বা রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে জড়দেহে প্রাণের স্পন্দন হয়। কলব বা অন্তঃকরণ হল মন্ত্রণালয়। যেখানে আল্লাহ, সংগীয় ফিরিশতা, সৎ মাতা-পিতা, সৎ অভিভাবক, সৎ স্বামী/স্ত্রী, সৎ আত্মীয়-স্বজন, সৎ বন্ধুমহল, সৎ পরিবেশ থেকে সর্বদা ভাল মন্ত্রণা দেয়। আবার শয়তান, রিপুসমূহ, জৈবিক দেহ, অসৎ মাতা-পিতা, অসৎ অভিভাবক, অসৎ স্বামী/স্ত্রী, অসৎ আত্মীয়-স্বজন,অসৎ বন্ধুমহল, অসৎ পরিবেশ থেকে সর্বদা খারাপ মন্ত্রণা দেয়া হয়। নাফস বা জীবাত্মা হল প্রবৃত্তি, প্রশাসন ও সামরিক বাহিনী। কোডকৃত ইলহাম হল বিবেক ও আদালত, যার মাধ্যমে সঠিক না ভুল- এর রায় পাওয়া যায়। জাসাদ বা শরীর ও তার অংগ-প্রত্যংগ হল প্রজা- যাদের মাধ্যমে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হয়। লিবাস হল- সৌন্দর্য্য।
জীবন ও মৃত্যুর রহস্য : রূহ যখন জাসাদের সংগে সংযোগ স্থাপন করে তখন দেহ জীবন লাভ করে। কিন্তু সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয় দুইভাবে। ঘুমের মাধ্যমে শুধু রূহ সাময়িকভাবে জাসাদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, কিন্তু রূহের দূর-প্রভাব শরীরের উপর কার্যকরী থাকে। আর মৃত্যুর মাধ্যমে নাফসসহ রূহ স্থায়ীভাবে জাসাদ বা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, ফলে রূহের প্রভাব শরীরের উপর তেমন অবশিষ্ট থাকে না। জাসাদ বা শরীর তখন একটি নির্জীব জড় পদার্থে পরিণত হয়।
আল্লাহ তা'য়ালা জীবন দানের ক্ষেত্রে শরীরের মধ্যে রূহের প্রবেশ এবং মৃত্যুর ক্ষেত্রে প্রাণ (নাফসসহ রূহ) বের হওয়ার কথা বলেছেন। রূহ যখন কলবের মাধ্যমে দেহের সাথে সংযুক্ত হয় তখন জংশনে দেহের পরিচালক নাফ্স তৈরী হয়, ফলে দেহের মধ্যে প্রাণের স্পন্দন সৃষ্টি হয়। যেমন- আল্লাহ বলেন :
অর্থাৎ- (স্মরণ করুন!) যখন আপনার প্রতিপালক ফেরেশতাদেরকে বলেছিলেন : আমি কাদা মাটি থেকে মানুষ সৃষ্টি করছি। যখন আমি তাকে সুষম করব এবং তাতে আমার রূহ সঞ্চারিত করব তখন তোমরা তার প্রতি সিজদবানত হও। (সূরা সোয়াদ : ৭২-৭৩)
দেহ থেকে রূহ এর স্থায়ী বিচ্ছিন্নতাই হল মৃত্যু। রূহ তখন নাফস্সহ জাসাদ বা শরীর থেকে স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন হয়। এই বিচ্ছিন্ন নাফস্সহ রূহকে আত্মা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেমন, আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ
অর্থাৎ- নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের আত্মাসমূহ কবয করেন তাদের মৃত্যুর সময় এবং যাদের মৃত্যুর সময় হয়নি, তাদের আত্মাসমূহও কবয করেন ঘুমের সময়। এরপর তিনি যার মৃত্যুর সিদ্ধান্ত নেন তার আত্মা রেখে দেন এবং অন্যদের আত্মা একটি নির্ধারিত সময়ের জন্য ফিরিয়ে দেন। এরমধ্যে অবশ্যই চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শন আছে। (সূরা যুমার : ৪২)
আল্লাহ তা'য়ালা বিশ্বের সমগ্র মানব জাতিকে এ মহাসত্য উপলব্ধির মাধ্যমে ইহ-জাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণ লাভ করার তৌফিক দান করুন! আ-মী-ন....
লেখাটার জন্য ধন্যবাদ
ReplyDeleteআশা করি আপনাদের কাজে আসবে
ReplyDeleteআমার এক বড় ভাইয়ের লেখা