আমাকে সবাই আবেগী এবং নাটুকে বলে।
প্রথম শব্দটার ব্যাপারে আমি দ্বিমত পোষণ না করলেও দ্বিতীয় শব্দটায় ঘোর
আপত্তি রাখি। আবেগী হতে পারি কিন্তু নাটুকে নই বলেই বিশ্বাস করি। আমি যেসব
কাজ করি সেগুলো আমার আবেগ থেকেই করি। কাউকে দেখানোর জন্য নয়। আমি অন্য কারো
মতো আবেগাক্রান্ত যায়গায় আবেগটাকে চাপা দিয়ে রাখতে পারিনা বলেই হয়তো সবাই
আমাকে নাটুকে বলে। অবশ্য অন্য সবাই আমাকে কি বললো না বললো তাতে আমার এতটুকু
যায় আসে না। কিন্তু দীবা যদি বলে “নাটক করিস নাতো” তাহলে মন বেশি খারাপ
হয়ে যায়।
আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়ি। অবশ্য দীবার সাথে সম্পর্কের শুরুটা হয়েছিল অনেকটা নাটকের মতনি।দীবাকে আমার ভালোলাগার কথা জানাতেই ও হেসে গড়িয়ে পড়ে বলেছিল-
- তুই! তুই করবি প্রেম!! তাও লোক পাইলিনা আমারে করছস অফার!!! দূরে যায়া মর। এই বিশয়ে আর কোনোদিন একটা কথাও বলবিনা আমার সামনে।
সেদিন খুব মন খারাপ করে অধুমপায়ী এ আমি পরপর ১০টা বেনসন & হেজেস টেনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। দীবা এসেছিলো। এসেছিলো আমাকে দেখতে। এবং বলেছিলো,
- তোরে মরতে কইছি, সিগ্রেট টাইনা অসুস্থ হইতে কইনাই। তবে চিন্তা করে দেখলাম তোর সাথে প্রেম করা যাই!! তবে এক শর্তে, তোরে কথা দিতে হবে আইজ থেকে আর কোনোদিন এইসব মেলোড্রামা উপহার দিবিনা।
কথাটা শুনে আমি অসুস্থ অবস্থায় এত জোরে চিৎকার দিয়েছিলাম যে হাসপাতালের সবাই একসাথে বিশ্ময় এবং ভয় নিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে পড়েছিলো।
- নাহ!! তোর এইসব নাটকের মাঝ দিয়েই সারাজীবন যেতে হবে বলে মনে হচ্ছে।
তবে দীবার হাসিমুখ বলে দিচ্ছিলো এমন নাটকে সে অখুশি নয় মোটেও। যদিও একটা বিরক্তিভাব মুখে চোখে ফোটানোর প্রানান্তর ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো তখনো।
আমাদের সম্পর্ক ভালো চললেও সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিচ্ছিলো যে, দিনের মাঝে তিন চারবার করে আমাদের ব্রেক-আপ হওয়াটা। যদিও আমিই আবার দীবার হাতে পায়ে ধরে সেটার যবানিকা টানছিলাম। এটা আমাদের ভালোবাসার বড় খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো বলেই আমার মনে হত।
পুরোনো কথা লিখছি আর মন আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে উঠছে। কিন্তু জানি এ আনন্দ বিষাদে পরিনত হবে কিছুক্ষন বাদেই। যখন চারপাশের পৃথিবী ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসবে, ঝাপসা হয়ে আসবে আমার নিজের হাতের লেখা, অস্পষ্ট হয়ে উঠবে চিরচেনা রুম, রক্তের গাঢ় লালে রঙিল হবে আমার রুমের মেঝে তখন। কারন আমি আমার বাম হাতের শিরাটা ঠান্ডা মাথায় কেটে ফেলেছি, যেখান দিয়ে গলগল করে বের হচ্ছে গাঢ় লাল রঙের রক্ত। আর অন্য হাত দিয়ে লিখে যাচ্ছি আমার প্রেমগাথা। জানাতে হবে অভিমানের কথা, পুঞ্জভিত ক্ষোভের কথা, আমি আবেগী হলেও বোকা নই। আমি আবেগের বশ বলেই এমন স্বিদ্ধান্ত নিতে কষ্ট হয়নি এতটুকু। রুমের দরজা বন্ধ করে, সুনিপুন ভাবে কেটে ফেলেছি হাতের উজ্জ্বল রগটাকে। এই আবেগের জন্যই দীবা আমাকে শুনিয়েছে অসংখ্য কথা। কিছুই মনে করেনি তাতে কিন্তু যখন যবানিকা টানতে চেয়েছে এই বলে যে,
- তোর সাথে আমার সম্পর্ক আজকেই শেষ। প্রেম করেছি অনেক কষ্টে কিন্তু ভেবে দেখলাম তোর মত নাটুকে লোককে বিয়ে করে ঘর করা অসম্ভব একটা কাজ। তাই দয়া করে এতদিনের সম্পর্কের দোহায় আমাকে আর জ্বালাস না।
তখন আমি পারিনি মেনে নিতে। ওর ঝাঝের কাছে নতজানু হয়ে শেষ চেষ্টা স্বরূপ বলেছিলাম,
- তোকে ছাড়া তো বাঁচবোনা।
- তাইলে মর গিয়া। কিন্তু আমারে ডিস্টার্ব করবিনা।
ঝাজ পুরোটুকু ধরে রেখেই প্রতিউত্তর দিয়েছিলো দীবা। কি এমন করেছিলাম যে ও আমার সাথে সম্পর্ক শেষ করে দিবে। নাই একটা মাইক ভাড়া করে ওর এলাকায় জানিয়ে দিয়েছাল “আমি তোকে ভালোবাসি”, নাই কিছু পোষ্টার ছাপিয়েছিলাম ওর যাত্রাপথে ভালোবাসার স্লোগান দিয়ে। তাই বলে সম্পর্ক শেষ করে দেবে বুঝে উঠতে পারিনি। বুঝে উঠতে পারিনি, বুঝেছিলাম এর পর থেকে যখন আর যোগাযোগ করতে পারছিলামনা দীবার সাথে তখন থেকে। এরপর থেকেই কঠিন স্বিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলাম, আমার নাটুকেপানার শেষ দেখতে হবেই এবং দেখাতে হবেই। ব্লেড দিয়ে যখন ছোট্ট একটা পোচ দিয়েছি শিরায় ছিলকে রক্ত বের হওয়া দেখে ভয় পেলেও আবাগের কাছে পরাজীত হয়ে এর মাঝে সুখ খুজে নিয়েছি। আমি যে সত্যি সত্যি আবগী, আবেগের কাছে বশবর্তী সেটা প্রমানে কয়েক মুহুর্ত দূরে থেকে এই ভেবে তৃপ্তি পাচ্ছিলাম যে লোকজন এখন বুঝবে, আবেগে করে ফেলা কাজের সফলতা না আসায় সেটা নাটুকে মনে হত কিন্তু এখন আমি সফল, আগের কাজগুলোও নাটুকে ছিলোনা।
ক্রমশ লেখার গতি ধীর হয়ে যাচ্ছে, জড়িয়ে যাচ্ছে সবকিছু। নির্জীব লাগছে শরীর, অস্পষ্ট হয়ে উঠেছে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশের ডায়েরীর পাতা, রক্তে রঙিল মনে হচ্ছে পুরো ঘর, ঘোর কাজ করছে, মায়াময়তা ঘিরে ধরছে আমাকে, তার মাঝেই মনে হলো দূর থেকে কে যেনো আমাকে ডাকছে, দরজায় কড়া নেড়ে যাচ্ছে আর বলছে “ঐ গাধা দরজা খোল তাড়াতাড়ি। আজ আমাদের এনিভার্সেরি।“ কন্ঠটা খুব চেনা চেনা লাগছে কিন্তু মনে করতে পারছিনা কোথায় শুনেছি কন্ঠটা।
আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়ি। অবশ্য দীবার সাথে সম্পর্কের শুরুটা হয়েছিল অনেকটা নাটকের মতনি।দীবাকে আমার ভালোলাগার কথা জানাতেই ও হেসে গড়িয়ে পড়ে বলেছিল-
- তুই! তুই করবি প্রেম!! তাও লোক পাইলিনা আমারে করছস অফার!!! দূরে যায়া মর। এই বিশয়ে আর কোনোদিন একটা কথাও বলবিনা আমার সামনে।
সেদিন খুব মন খারাপ করে অধুমপায়ী এ আমি পরপর ১০টা বেনসন & হেজেস টেনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। দীবা এসেছিলো। এসেছিলো আমাকে দেখতে। এবং বলেছিলো,
- তোরে মরতে কইছি, সিগ্রেট টাইনা অসুস্থ হইতে কইনাই। তবে চিন্তা করে দেখলাম তোর সাথে প্রেম করা যাই!! তবে এক শর্তে, তোরে কথা দিতে হবে আইজ থেকে আর কোনোদিন এইসব মেলোড্রামা উপহার দিবিনা।
কথাটা শুনে আমি অসুস্থ অবস্থায় এত জোরে চিৎকার দিয়েছিলাম যে হাসপাতালের সবাই একসাথে বিশ্ময় এবং ভয় নিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে পড়েছিলো।
- নাহ!! তোর এইসব নাটকের মাঝ দিয়েই সারাজীবন যেতে হবে বলে মনে হচ্ছে।
তবে দীবার হাসিমুখ বলে দিচ্ছিলো এমন নাটকে সে অখুশি নয় মোটেও। যদিও একটা বিরক্তিভাব মুখে চোখে ফোটানোর প্রানান্তর ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো তখনো।
আমাদের সম্পর্ক ভালো চললেও সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিচ্ছিলো যে, দিনের মাঝে তিন চারবার করে আমাদের ব্রেক-আপ হওয়াটা। যদিও আমিই আবার দীবার হাতে পায়ে ধরে সেটার যবানিকা টানছিলাম। এটা আমাদের ভালোবাসার বড় খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো বলেই আমার মনে হত।
পুরোনো কথা লিখছি আর মন আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে উঠছে। কিন্তু জানি এ আনন্দ বিষাদে পরিনত হবে কিছুক্ষন বাদেই। যখন চারপাশের পৃথিবী ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসবে, ঝাপসা হয়ে আসবে আমার নিজের হাতের লেখা, অস্পষ্ট হয়ে উঠবে চিরচেনা রুম, রক্তের গাঢ় লালে রঙিল হবে আমার রুমের মেঝে তখন। কারন আমি আমার বাম হাতের শিরাটা ঠান্ডা মাথায় কেটে ফেলেছি, যেখান দিয়ে গলগল করে বের হচ্ছে গাঢ় লাল রঙের রক্ত। আর অন্য হাত দিয়ে লিখে যাচ্ছি আমার প্রেমগাথা। জানাতে হবে অভিমানের কথা, পুঞ্জভিত ক্ষোভের কথা, আমি আবেগী হলেও বোকা নই। আমি আবেগের বশ বলেই এমন স্বিদ্ধান্ত নিতে কষ্ট হয়নি এতটুকু। রুমের দরজা বন্ধ করে, সুনিপুন ভাবে কেটে ফেলেছি হাতের উজ্জ্বল রগটাকে। এই আবেগের জন্যই দীবা আমাকে শুনিয়েছে অসংখ্য কথা। কিছুই মনে করেনি তাতে কিন্তু যখন যবানিকা টানতে চেয়েছে এই বলে যে,
- তোর সাথে আমার সম্পর্ক আজকেই শেষ। প্রেম করেছি অনেক কষ্টে কিন্তু ভেবে দেখলাম তোর মত নাটুকে লোককে বিয়ে করে ঘর করা অসম্ভব একটা কাজ। তাই দয়া করে এতদিনের সম্পর্কের দোহায় আমাকে আর জ্বালাস না।
তখন আমি পারিনি মেনে নিতে। ওর ঝাঝের কাছে নতজানু হয়ে শেষ চেষ্টা স্বরূপ বলেছিলাম,
- তোকে ছাড়া তো বাঁচবোনা।
- তাইলে মর গিয়া। কিন্তু আমারে ডিস্টার্ব করবিনা।
ঝাজ পুরোটুকু ধরে রেখেই প্রতিউত্তর দিয়েছিলো দীবা। কি এমন করেছিলাম যে ও আমার সাথে সম্পর্ক শেষ করে দিবে। নাই একটা মাইক ভাড়া করে ওর এলাকায় জানিয়ে দিয়েছাল “আমি তোকে ভালোবাসি”, নাই কিছু পোষ্টার ছাপিয়েছিলাম ওর যাত্রাপথে ভালোবাসার স্লোগান দিয়ে। তাই বলে সম্পর্ক শেষ করে দেবে বুঝে উঠতে পারিনি। বুঝে উঠতে পারিনি, বুঝেছিলাম এর পর থেকে যখন আর যোগাযোগ করতে পারছিলামনা দীবার সাথে তখন থেকে। এরপর থেকেই কঠিন স্বিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলাম, আমার নাটুকেপানার শেষ দেখতে হবেই এবং দেখাতে হবেই। ব্লেড দিয়ে যখন ছোট্ট একটা পোচ দিয়েছি শিরায় ছিলকে রক্ত বের হওয়া দেখে ভয় পেলেও আবাগের কাছে পরাজীত হয়ে এর মাঝে সুখ খুজে নিয়েছি। আমি যে সত্যি সত্যি আবগী, আবেগের কাছে বশবর্তী সেটা প্রমানে কয়েক মুহুর্ত দূরে থেকে এই ভেবে তৃপ্তি পাচ্ছিলাম যে লোকজন এখন বুঝবে, আবেগে করে ফেলা কাজের সফলতা না আসায় সেটা নাটুকে মনে হত কিন্তু এখন আমি সফল, আগের কাজগুলোও নাটুকে ছিলোনা।
ক্রমশ লেখার গতি ধীর হয়ে যাচ্ছে, জড়িয়ে যাচ্ছে সবকিছু। নির্জীব লাগছে শরীর, অস্পষ্ট হয়ে উঠেছে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশের ডায়েরীর পাতা, রক্তে রঙিল মনে হচ্ছে পুরো ঘর, ঘোর কাজ করছে, মায়াময়তা ঘিরে ধরছে আমাকে, তার মাঝেই মনে হলো দূর থেকে কে যেনো আমাকে ডাকছে, দরজায় কড়া নেড়ে যাচ্ছে আর বলছে “ঐ গাধা দরজা খোল তাড়াতাড়ি। আজ আমাদের এনিভার্সেরি।“ কন্ঠটা খুব চেনা চেনা লাগছে কিন্তু মনে করতে পারছিনা কোথায় শুনেছি কন্ঠটা।
লেখক কে ফেইসবুকে Follow করুনঃ
লেখাটি পছন্দ হয়েছেঃ
No comments:
Post a Comment
পোস্ট সম্পর্কে মতামত দিন