প্রণব স্যার এবং কনসেপ্ট ম্যাথড

(আমার এই লিখাটি স্যার আমি আপনার প্রতি উৎসর্গ করলাম)

স্যারের কাছে যারা পড়ে না তারাও অনেকে স্যারের কনসেপ্ট ম্যাথডের নাম শুনেছে। স্যারের কাছে এক বছর ধরে পড়ে আসছি। দুঃখের বিষয় হল, উনার নামে Google এ সার্চ দিয়ে কোন তথ্যই পাইনি। তাই সবকিছু নিজেকেই সংগ্রহ করতে হয়েছে।

স্যারের মুখে এই এক বছরে শোনা common কিছু উক্তিঃ

প্রণব স্যার

• "এই হল কনসেপ্ট ম্যাথডের পাওয়ার"
• "কনসেপ্ট ম্যাথডের মানুষরা নোটবাদীদের ঘৃণা করে।"
• "স্টুডেন্টস দেখ, আমার সকল কনসেপ্ট ম্যাথডধারী স্টুডেন্ট রা বুয়েট আর মেডিকেলে ছড়িয়ে আছে।" 

যাই হোক! স্যারের মুখ থেকে শুনে যতটুকু আমার এই মস্তিষ্কে করতে পেরেছি তা হল, কনসেপ্ট ম্যাথডে পড়ার উদ্দেশ্য হল যেটি নিয়ে পড়ছি সে বিষয় সম্পর্কে আবছা ধারণা না রেখে সম্পুর্ণ স্বচ্ছ ধারণা রাখা।

"কনসেপ্ট ম্যাথডের মূল শক্তি হল ঐ বিষয়টির সংজ্ঞায়।"

টপিকটি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখতে হলে চাই টপিকটির সকল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানা। কিন্তু সকল বিষয়বস্তু ছোট্ট মাথায় ধারণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে আমাদের সংজ্ঞাটি মুখস্থ করতে হবে (কাটা, কারণ আমরা করব না)। কিন্তু আমরা যদি সংজ্ঞাটি মুখস্থ করি তাহলে তার অর্ধেকও ফল পাওয়া যাবে না।
স্যারের মতে সংজ্ঞা যদি পরিপূর্ণ ভাবে নিজের আয়ত্তে আনতে হয়, তাহলে সেটিকে জীবন্ত পোস্টমর্টেম করতে হবে। জীবন্ত পোস্টমর্টেম বলতে সংজ্ঞাটিকে প্রথমে তার প্রথমে তার প্রধান বিষয় বস্তু অনুসারে ভাগ করে ফেলতে হবে। তারপর সেগুলোকে পয়েন্ট আকারে সাজিয়ে লিখতে হবে। সংজ্ঞাটি যদি পয়েন্ট আকারে সুন্দর করে সাজানো যায় তাহলে সংজ্ঞাটির অনেকখানি পরিপূর্ণতা পাওয়া যাবে। যেটি কখনো বইয়ের সংজ্ঞায় পাওয়া যায় না। তাছাড়া সংজ্ঞাটিকে নিজের মনের অনুযায়ী সাজিয়ে লিখা যায়। ফলে পরীক্ষার সময় মনে থাকে।

Chemistry -র একটি সংজ্ঞায় কনসেপ্ট ম্যাথডঃ 

পুরাতন হাজারী  স্যারের বই অনুসারে স্থুল সংকেতের সংজ্ঞাটি হল,
 "কোন যৌগের অণুতে কোন কোন মৌল আছে এবং সে সব মৌলের পরমাণু সমুহের সংখ্যা কী ক্ষুদ্রতম পূর্ণ সংখ্যার অনুপাতে আছে তার প্রতীক সহযোগে সংক্ষিপ্ত প্রকাশকে ঐ যৌগের স্থুল সংকেত বলে।"

 কনসেপ্ট ম্যাথড প্রয়োগে সংজ্ঞাটিঃ 

 স্থুল সংকেত

• কোন কোন মৌল আছে 
• মৌলের পরমাণু সমুহের সংখ্যা কী ক্ষুদ্রতম পূর্ণ সংখ্যার অনুপাতে আছে 
• প্রতীক সহযোগে সংক্ষিপ্ত প্রকাশ 

এবার নিজের ইচ্ছামত সংজ্ঞাটি কে সাজানো যায়।

যেমনঃ
স্থুল সংকেত হল প্রতীক সহযোগে এক ধরনের সংক্ষিপ্ত প্রকাশ, যা যৌগটিতে কোন কোন মৌল আছে এবং মৌল সমূহের সংখ্যা কী ক্ষুদ্রতম পূর্ণসংখ্যার অনুপাতে আছে তা নির্দেশ করে। 

এ উপায়ে সংজ্ঞাটির পয়েন্টগুলো সম্পর্কে আগে স্বচ্ছ ধারণা নিতে হবে তারপর সংজ্ঞাটি সাজাতে হবে। তখন এই সংজ্ঞা থেকেই স্থুল সংকেত সম্পর্কে সকল ধারণা ক্লিয়ার হয়ে যাবে। প্রায় সকল তাত্ত্বিক বিষয়েই এ ম্যাথড প্রয়োগ করা যায়।

প্রণব স্যার

সবার প্রতি, 
স্যারের কাছে আসতে স্যারকে অপমান করব না। স্যার বেশী স্টুডেন্ট পছন্দও করেন না।

সবাইকে বলি, স্যারের এই ম্যাথড ফলো করুন। তাহলে টপিক সম্পর্কে পড়ার আগেই ৬০% পড়া হয়ে যাবে। ফলে বাকি পড়া সহজ হয়ে যাবে। আর স্যার সবচেয়ে বেশী সংজ্ঞায় জোড় দেন। কেননা উনার উদ্দেশ্য ভিত্তি মজবুত করা।

আমার বন্ধু সমন্বয় কনসেপ্ট ম্যাথডের সংজ্ঞা সম্পর্কে বলেছে, এ সংজ্ঞায় কোনো কমতি হবে না।যেমনঃ যে সংজ্ঞা হবে তার পয়েন্ট হতে ঐ সংজ্ঞা সম্পর্কে অন্য কোন পয়েন্ট যেন বাদ না পরে। একটা মানুষের পক্ষে সকল কিছু আয়ত্ত করা খুব কমই সম্ভব। কিছু না কিছু কমতি থাকেই। হয়ত তা ১%।

 পরিশেষে বলব,  

"ধন্য প্রণব স্যার, ধন্য উনার কনসেপ্ট  ম্যাথড।"

লেখকঃ হাবিবুর রহমান

লেখক কে ফেইসবুকে Follow করুনঃ 

লেখাটি ভালো লেগেছে এবং আমি আমার ফেইসবুক ওয়ালে শেয়ার করছি